বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ

অ্যাডভোকেট শাকী শাহ ফরিদী
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৪০:১২,অপরাহ্ন ০৬ ডিসেম্বর ২০২০20 - 20Shares
এই আঘাত মানে স্বাধীনতার উপর খামচা দেয়া, এই আঘাত মানে সার্বভৌমত্বের উপর কুদৃষ্টি দেয়া, এই আঘাত মানে মানচিত্রকে ক্ষতবিক্ষত করা৷ কালকে দেশের সব অফিস-আদালত থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানোর ট্রায়াল এই আঘাত, পরশু দেশের সব টাকার নোট থেকে শেখ মুজিবকে মুছে ফেলার ট্রায়াল এই আঘাত, পরেরদিন পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখ মুজিবের নামনিশানা গায়েব করে দেয়ার ইনিশিয়াল ট্রায়াল এই আঘাত, পরের প্রজন্মের কাছে শেখ মুজিবকে অচেনা এক সাধারণ মানুষ বানিয়ে ফেলার ট্রায়াল এই আঘাত৷
সুতরাং আজকে বসতে দিলে কালকে শুইতে চাইবে এরা, প্রতিরোধ তাই এখন সময়ের দাবি৷
বাংলাদেশের আরেক বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি শেখ মুজিবের জায়গায় জিয়াউর রহমানকে এমন চিত্রে ভাবতে পারেন, আগামীতে আপনারা ক্ষমতায় আসলে জিয়াউর রহমানকে নিয়েও এরা একই কান্ড করে যাবে।
উগ্রবাদী, দেশের আইনবিরোধী, ধর্মব্যবসায়ীরা না দেশের ভালো চায়, না পবিত্র ধর্ম ইসলামের ভালো চায়। দেশ কিভাবে চলবে তার ফয়সালা ৭১’এ হয়ে গেছে, সংবিধান প্রণীত হয়েছে, স্বাধীন দেশ হয়েছে৷ নতুন করে ধান্ধা করার কোনো সুযোগ নেই৷
আপনারা এই আঘাতগুলো করতে পারেন না লাইসেন্স করা মদের বারে? কোটিপতিদের রঙমহলে? নগ্নতার পানশালায়? বড়লোকদের জুয়াড় আখড়ায়? ফাইভস্টার কিংবা ভাসমান পতিতালয়ে? ধর্ষণকারীদের কামুক চেহারায়? বলৎকারকারী হুজুরদের রেস্ট রুমে? মাজারে নারীপুরুষ অবাধ মেলামেশা আর গাঁজা টানা দরগার মামুদের ঘাড়ে? প্রকাশ্যে ঘুষ নেয়া অফিসারের অফিসে? প্রকাশ্যে সুদ খাওয়া হারামিদের বাড়িতে? আন্দোলন করতে পারেননা দেশে “শরীয়াহ” আইন চালু করার? সবগুলো এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নামেন, ধরে নিব ইসলামের জন্যে কাজ করছেন আপনারা৷ সব রেখে হঠাৎ ভাস্কর্য নিয়ে চাঙ্গা হলেন ব্যাপার কি? উদ্দেশ্য ধর্ম রক্ষা নয়, উদ্দেশ্য ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি আর ধর্ম ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন৷ সুতরাং, ব্যাপারটা ধর্মীয় নেতাদের ধর্মনীতি নয়, স্পষ্টতই ব্যাপারটা ধর্মকে ব্যাবহার করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আবেগে ফেলে নিজ স্বার্থ হাসিলের পায়তারা।
বাংলাদেশে শরীয়াহ আইন বিদ্যমান নেই, বিভিন্ন শরীয়াহ আইনে চলা দেশেও ভাস্কর্য আছে৷ এদেশের আইনে ভাস্কর্য নির্মাণ বৈধ, সুতরাং যারা এটি ভেঙ্গেছে তারা দেশের আইন ভঙ্গ করেছে, শাস্তি হওয়াটা জরুরী। ভাস্কর্য নির্মাণ অবৈধ হলেও আপনারা আইন হাতে তুলে নিতে পারেননা, আপনাদের আরজি থাকলে নতুন আইন হওয়ার জন্যে দাবি উঠান।
আপনারা অতি উৎসাহী, কয়েকটা উগ্র উস্কানিমূলক বক্তৃতা আর নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের অসহায় এতিম বাচ্চাগুলোকে মিছিলে এনে সমাগম ঘটিয়ে গলা ফাটালেই ইসলামের উন্নয়ন সাধিত হয়না, জনসম্পৃক্ততাও হয়না। এদেশের বিশাল সংখ্যক নারীদেরকে সম্মান না করে উল্টো তাদেরকে প্রাগৈতিহাসিক বর্বর যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বক্তৃতা করে ধর্মীয় নেতা হওয়া যায়না। ইসলাম এতোটা ঠুনকো নয়, ইসলামের শেকড় অনেক গভীরে৷ পবিত্র ইসলামকে সম্মান করুন, নিজ স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার বন্ধ করুন৷
মনে রাখবেন, ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়৷ আরো মনে রাখবেন শেখের বেটি শেখ হাসিনা এদেশের প্রধানমন্ত্রী, সুতরাং থামুন- আবার ভাবুন, তারপর সামলাতে পারবেন মনে করলে বাকিটা খেলায় নামুন, মোস্ট ওয়েলকাম…
20 - 20Shares