ভূমিহীনদের জন্য বন্দোবস্তকৃত খাসজমিতে জায়গা পেলেন লাখপতি

লাখাই প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৩৩:৫৫,অপরাহ্ন ০৭ এপ্রিল ২০২১হবিগঞ্জের লাখাইয়ে ভূমিহীনদের জন্য বন্দোবস্তকৃত খাসজমিতে স্থান পেল লাখপতি পিন্টু সরকার (৩০) ।
সরকার ঘোষিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১ নং লাখাই ইউনিয়নের রুহিতনসী মৌজায় ৩০ টি অসহায় ও ভূমিহীন পরিবারের জন্য ৩ একর সরকারি খাসজমির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কিন্তু সেই তালিকায় উঠে এসেছে লাখপতি ব্যবসায়ী পিন্টু সরকারের নাম। এ নিয়ে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং তালিকা প্রণয়ন কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে একাধিক বাড়ির মালিকানায় তার নাম। তাছাড়া স্বজনগ্রামের টাউনশিপে সরকারি ভবনে দিব্যি আরামে মুদীমালের ব্যবসা চালাচ্ছেন। সেই সাথে আছে উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে মায়ের বদৌলতে পাওয়া ঝাড়ুদারের চাকুরি।
লাখাই ইউনিয়নের স্বজনগ্রামের ৩০৪৪ নং দাগে ৪ শতাংশ জমিতে পাওয়া গেছে তার নিজস্ব আনুমানিক ৬ লক্ষ টাকার আধাপাকা বিল্ডিং। স্বজনগ্রামের গুপ্তহাটিতে পাওয়া গেছে তার পৈতৃক ভিটার সন্ধান। যেখানে সাবেক দাগ নং ১৮৬০ ও সাবেক ১৮৬১ নং দাগে মোট জমির পরিমাণ ৮ শতাংশ।
যা ভূমিহীন তালিকায় নাম পাওয়ার পর স্বজনগ্রামের আজগর আলীর ছেলে ফরিদ মিয়ার নিকট বিক্রি করে বছর ক্রয় করেছেন ৪ শতাংশের বাড়ি। স্হানীয়দের অভিযোগ, পৈতৃক ভিটা থাকা সত্ত্বেও সে ভূমিহীনের তালিকায় নাম পেয়েছে রেজিস্ট্রার অফিসে ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করার সুবাদে।
সরকার যে দলিল ভূমিহীন হিসেবে প্রদান করেছেন সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে তথ্য গোপন করে জায়গা পেলে ৯৯ বছরের জন্য প্রাপ্ত মালিকানা স্বত্ব বাতিল হয়ে যেতে পারে। এমনকি আইনানুগ ব্যবস্থা ও নিতে পারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এমতাবস্থায় অবস্থা বেগতিক দেখে স্বজনগ্রামের আয়নারটুকের বাসিন্দা মৃত শওকত মিয়ার ছেলে সিদ্দিক মিয়ার কাছে ৩ লক্ষ টাকায় প্রাপ্ত ১০ শতাংশ ভূমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে পিন্টু সরকারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে জমি বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেন। নিজের দুইটি বাড়ির বিষয়ে জানতে চাইলে একটি বাড়ির বিষয়ে জানান, ভূমিহীন হিসেবে নাম পাওয়ার পর তিনি নতুন বাড়ি কিনেছেন। ভূমিহীন হিসেবে নাম পাওয়ার আগে নিজের পৈতৃক ভিটা সম্পর্কে জানতে চাইলে তা কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি।
ব্রয়লারের কাজের সুবাদে আশুগঞ্জে অবস্থান করায় প্রাপ্ত সরকারি জমি বিক্রির সত্যতা যাচাই করতে আয়নারটুকের বাসিন্দা সিদ্দিক মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে লাখাই উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) ইয়াছিন আরাফাত রানা জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।