ওসমানীনগরে বানভাসিদের পাশে একজন মানবিক আলী আমজদ

ওসমানীনগর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:১৫:২৩,অপরাহ্ন ০১ জুলাই ২০২২সিলেটের কীণ ব্রীজের পাশের বড় ঘরির জন্য মানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছেন আলী আজমদ। আর সিলেটের ওসমানীনগরে বানভাসিদের জন্য মানবিক কাজ করে মানুষের মনে স্থান করে নিচ্ছেন উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের নগরীকাপন গ্রামের আলী আমজদ।
গত ১২ দিন ধরে পারিবারিক ও স্বজনদের আর্থিক সহযোগিতায় বানভাসি মানুষের জন্য খাদ্য সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন এই পরোপকারী তরুন। শুধু ত্রাণ সহযোগিতা নয় গত বুধবার তার ছেলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে একটি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের ৬০টি পরিবারের মধ্যে মিষ্টিও বিতরণ করতে দেখা যায় তাকে।
তার পুরো নাম আলী আমজদ চৌধুরী সিজু। স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের পরিচালক তিনি। পরিবারের প্রায় সকল সদস্য প্রবাসে থাকলেও স্ত্রী সন্তান নিয়ে তিনি দেশে আছেন। কখনো নেতা বা জনপ্রতিনিধি হওয়ার সখ নেই তার। মানবিক দায়বদ্ধতা, শিশুপুত্র আলী আহনাফ চৌধুরী ও পরিবারের সদস্যদের অনুপ্রেরণা তাকে এই কাজে অনুপ্রেরণা যোগিয়ে যাচ্ছে। ১৯ জুন থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১২দিনে প্রায় ৭হাজার মানুষকে সাধ্যমতো খাদ্য সহযোগিতা করেছেন তিনি । গত করোনা মহামারিতেও তিনি পরিবারের সহযোগিতায় অসহায় মানুষদের খাদ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন।
জানা যায়, গত ১৯ জুন থেকে কখনো ছিড়া, মুড়ি, বিস্কুট, কলা/আম, স্যানেটারি নেপকিন ও জরুরী ঔষধ ভর্তি প্যাকেট আবার কখনো বাড়িতে রান্না করা মোরগ বিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন বানভাসি মানুষের বাড়িবাড়ি। এখন পর্যন্ত মানবিক এই কাজ অব্যাহত রেখেছেন তিনি। গত বুধবার তার ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে ইয়াহইয়া চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের ৬০টি পরিবারের মধ্যে মিষ্টিও বিতরণ করেন তিনি। মওলুদ চৌধুরী, গিয়াসুর রহমান, দুরুদ চৌধুরী, সত্যেশ চক্রবর্তী, ইয়ামিন চৌধুরী ও রাসেল মিয়াকে সাথে নিয়ে খাদ্য সামগ্রি বিতরণের কাজটি করছেন তিনি।
সিজুর পিতা আলী আহমদ চৌধুরীসহ তার দুই ভাই ও এক বোন প্রবাসী। তারা সকলেই সিজুর মানবিক কাজে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি নিকট আত্মীয় প্রবাসী হালিম চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাহেদ চৌধুরী, ডাঃ আলো চৌধুরী ও বায়েস কোরেসি আর্থিক সহযোগিতা করছেন।
স্থানীয় আবদুল মতিন বলেন, বন্যার শুরু থেকে প্রায় প্রতিদিন বানভাসি মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ছুটতে দেখা যাচ্ছে আলী আজমদ চৌধুরী সিজুকে। তার এই মানবিক কাজ মনে রাখার মতো।
আলী আমজদ চৌধুরী সিজু বলেন, প্রথম ৫দিন পারিবারিক অর্থ ব্যয় করে বানভাসি মানুষের মাঝে খাদ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে সক্ষম হই। পরবর্তীতে প্রবাসী আত্মীয়দের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে বানভাসিদের পাশে রয়েছি।
আগামী শনিবার থেকে ৬শ পরিবারকে চাল, ডাল, পিয়াজ, তৈল, লবন ও সাবান ভর্তি একটি করে প্যাকেট, ঈদের দুই দিন আগে ৫শ পরিবারকে সেমাই, লাচ্ছি ও দুধ-চিনি ভর্তি একটি করে প্যাকেট এবং পরবর্তীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৫০টি পরিবারকে ঢেউটিন দিয়ে সহযোগিতার প্রস্তুতিও নিয়েছেন বলে জানান তিনি।