গোয়ালাবাজারের সালিস ব্যক্তিত্বদের সিলেটে সংবাদ সম্মেলন

নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:২৪:০৬,অপরাহ্ন ০৭ নভেম্বর ২০১৯ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারের গ্রামতলা রোডের প্রবাসী আছাব মিয়ার কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক সহ এলাকার সালিস ব্যক্তিত্বরা। বিরোধপূর্ণ ভুমি নিয়ে সালিস বৈঠকে বসতে রাজি হয়েও আছাব মিয়া সালিস ব্যক্তিত্বদের পাশ কাটিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করেছেন। একই সঙ্গে সালিস ব্যক্তিত্বদের বিতর্কিত করতে তিনি ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। এটা কোনো ভাবেই কাম্য হতে পারে না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান গোয়ালাবাজারের সালিস ব্যক্তিত্বরা। পাশাপাশি এলাকার একাধিকবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক মিয়ার সুনাম ক্ষন্নের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে গোয়ালাবাজারের সালিস ব্যক্তিত্বদের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন, গ্রামতলা রোডের বাসিন্দা বাদল কান্তি দেব।
সংবাদ সম্মেলনে বাদল কান্তি দেব জানান- ‘প্রবাসী আছাব মিয়া আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। সম্প্রতি এলাকার জাবেদ আহমদ আম্বিয়া গ্রামতলাস্থ আছাব মিয়ার বাসা সংলগ্ন ভূমি মুল মালিক রওশন আরা বেগমের কাছ থেকে ক্রয় করেন। ক্রেতা-বিক্রেতার অনুরোধে ওই ভূমির সীমানা চিহ্নিত করার জন্য গত ২৫ শে অক্টোবর গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক, স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল সামাদ, গোয়ালাবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সেক্রেটারী তাজউদ্দিন আহমদ, ইউপি আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সজল দেব, দলিল লেখক আখতার হোসেনসহ আমরা একই এলাকার বেশ ক’জন ঘটনাস্থলে যাই। ক্রয়কৃত ভূমি পরিমাপের পর দেখা যায় আছাব মিয়ার বাসার দেওয়াল রওশন আরা বেগমের বিক্রিত ভূমির সীমানার মধ্যে পড়েছে।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছাব মিয়া সালিসকারীদের কাছে আব্দার করে জানান- ভূমিরপূর্ণ মালিকানার কাগজ তার কাছে রয়েছে। কয়েকদিন সময় দিলে তিনি কাগজ দেখাতে পারবেন। তাকে কাগজ দেখানোর সুযোগ দিয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে চলে আসি।’
তিনি জানান, ‘গত ২রা নভেম্বর বিকেলে কাগজপত্র নিয়ে গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন অফিসে আছাব মিয়া উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও তিনি যথাসময়ে আসেননি। ঘন্টাখানেক পর ইউপি সদস্য আব্দুল সামাদ আছাব মিয়াকে ফোন দিলে তিনি নিজেকে গুরুতর অসুস্থ দাবি করে সিলেটের একটি ক্লিনিকে ভর্তি রয়েছেন বলে জানান। এরপর হঠাৎ করে কাউকে কিছু না বলে তিনি গত মঙ্গলবার আমাদের নামে মিথ্যে অপপ্রচার চালিয়ে সিলেটে সংবাদ সম্মেলনসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন। এ ঘটনার মাধ্যমে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ আমাদের সামাজিক ভাবে চরম হেয়-প্রতিপন্ন করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনের প্রবাসী আছাব মিয়ার অভিযোগ খন্ডন করে বাদল দেব বলেন- ‘স্থানীয় এলজিইডি রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়া ড্রেনের সাথে এলাকার প্রতিটা বাসার ড্রেন সংযোগ রয়েছে। এই ড্রেনের মাধ্যমে বৃষ্টি ও বাসা বাড়ির পানি গ্রামতলার খালে মিলিত হয়েছে। সম্প্রতি অভিযোগকারী আছাব মিয়া আমাদের প্রতিবেশী অসিত দেবনাথ, সুমন দেবনাথ, আশিষ দেবনাথ, সুকুমার দেবনাথ, রব্বান খান ও হাজী রফিক মিয়ার বাসার পানি নিস্কাশনের রাস্তা আরসিসি ঢালাই দিয়ে জোরপূর্বক বন্ধ করে দেন। এ বিষয়ে ভূক্তভোগীরা স্থানীয় গ্রাম আদালতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি বর্তমানে তদন্তাধীন পর্যায়ে রয়েছে।’
সংবাদ সম্মলে উপস্থিত ছিলেন- গোয়ালাবাজারের ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক, প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ, প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, গোয়ালাবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সেক্রেটারী তাজ উদ্দিন, ইউপি সদস্য তছন মিয়া, ব্যবসায়ী রফিক মিয়া, ইউপি সদস্য বেলাল আহমদ, গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সজল দেব, ব্যবসায় রজতকান্তি দাশ, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য নিপুন সূত্রধর ও ব্যবসায়ী হোসেন আহমদ চৌধুরী নাইম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সালিস ব্যক্তিত্বরা জানান- আছাব মিয়া নিজেকে প্রবাসী দাবি করেছেন। আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিকও যুক্তরাজ্য প্রবাসী। শুধুমাত্র মানবসেবার ব্রত নিয়ে তিনি প্রবাস জীবন ছেড়ে গোয়ালাবাজারের মানুষের সুখে, দু:খে পাশে রয়েছেন। নিজে একজন প্রবাসী হওয়ায় চেয়ারম্যানের কাছে সব চেয়ে বেশি ন্যায় বিচার পান এলাকার প্রবাসীরা। সংবাদ সম্মেলনে তারা আছাব উদ্দিনের এ মিথ্যাচার মানহানিকর বক্তব্যের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সিলেটের প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান তারা।