দোয়ারাবাজারে ঠিকাদারের গাফিলতিতে যাতায়াত ভোগান্তি

দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি:
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৫৮:৩০,অপরাহ্ন ২৫ অক্টোবর ২০১৯সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের গুরুত্বপূর্ণ দোয়ারা-ব্রিটিশ পয়েন্ট ও বালিউড়া সড়কে চলাচলকারী ৫ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ চরম যাতায়াত দুর্ভোগে পড়েছেন। ১১ মাস আগে ২১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এই সড়ক নতুন করে পাকা করণের কাজ শুরু হয়। কাজ শেষ করার সময়সীমা আর ৫ মাস, অথচ সড়কের কাজ ১৫ থেকে ২০ ভাগ হয়েছে।
খানাখন্দ ভরপুর সড়কে, কোথাও কোথাও মালামাল বা আবার কোথাও যন্ত্রপাতি রেখে সড়ক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এলাকাবাসী’র পায়ে হেঁটে চলাচল করা ছাড়া এখন আর কোন বিকল্প নেই। দোয়ারাবাজারের সীমান্ত এলাকার বাঁশতলা পর্যটন এলাকা হিসাবে পরিচিত। এই এলাকার যাতায়াত সড়ক এটি।
এছাড়া দোয়ারাবাজার উপজেলার ভোগলাবাজার ইউনিয়ন, নরসিংপুর ইউনিয়ন, ছাতকের নোয়ারাই ইউনিয়নের একাংশ এবং দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের একাংশের মানুষের যাতায়াত সড়ক এটি।
গত বছরের নভেম্বর মাসে ঢাকার সালেহ-ইসলাম জেবি কন্সট্রাকসন এই সড়কের কাজ পায়। গত প্রায় ১১ মাসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কাজ করেছে সড়কের। সড়কের কাজ শুরু করে কাজ না করায় বিপাকে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। সড়কে যানবাহন চলাচলের কোন উপায় নেই। খানাখন্দ ভরপুর সড়কে কোথাও কোথাও এলোপাতারি ভাবে সামান্য পরিমাণে মালামাল রাখা হয়েছে, কোথাওবা কাজের যন্ত্রপাতি বা ঢালাই মেশিন রেখে সড়ক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ১১ মাসে ব্রিটিশ পয়েন্ট এলাকায় ৫ থেকে ৭’শ ফুট কাজ করা ছাড়া অন্য এলাকায় কোন কাজই হয় নি।
বাংলাবাজারের বাসিন্দা মুনসুর আহমদ বলেন,‘আমরা অসহায় হয়ে গেছি, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সকলের কাছে নালিশ করেছি। কোন অগ্রগতি হয় নি। চলাচলের জন্য মানবেতর অবস্থায় পড়েছি। সড়কের নৌকারভাঙা সড়কের এলাকায় একটি ঢালাই যন্ত্র রেখে পথ বন্ধ করা হয়েছে। অন্য এলাকাও ভাঙাচোরা। মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করছে। রোগী হলে পলো দিয়ে বা অন্য কোনভাবে কাধে করে নিতে হচ্ছে। অসুস্থ মানুষ পথেই মারা যাচ্ছে। ঠিকাদার প্রভাবশালী, এজন্য না কী কারো কথাই শুনছে না।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম আহমেদ চৌধুরী রানা বলেন, জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি, প্রত্যেক সমন্বয় সভায় এই নিয়ে কথা বলছি। বৃহস্পতিবারও এ নিয়ে সমন্বয় সভায় আলোচনা করেছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক সাহেব সভায় ছিলেন, তিনি সড়কের কাজের এমন ধীরগতির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি উপস্থিত সকলকে জানিয়েছেন, ঢাকায় গিয়ে প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলবেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ দেখভালকারী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এই এলাকার কিছু খারাপ মানুষের জন্য কাজে বিলম্ব হচ্ছে। তারা এসে মালামাল সরবরাহের প্রস্তাব দেয়, না দিলেই কাজ আটকায়, চাঁদা দাবি করে। বন্যার সময় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন কাজের এলাকায় মালামালই নেওয়া যাচ্ছে না। মালামাল কোনভাবে নিলেও, রাখা যাচ্ছে না। মালামাল চুরি হয়ে যায়। মানুষ সহযোগিতার বদলে যন্ত্রণা বেশি দেয়। এভাবে কাজ করা কঠিন।
দোয়ারাবাজার এলজিইডি’র প্রকৌশলী হরজিৎ সরকার বলেন, আমরা কাজ আদায়ের জন্য বার বারই চাপ দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত এই সড়কের কাজ ১৯ শতাংশ হয়েছে। মানুষের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ঠিকাদারের উচিৎ কাজটি দ্রুত শেষ করা। বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছি।