ওসমানীনগরে পল্লী বিদ্যুতের মতবিনিময়: ১৭ জনের সভায় ২৩ ফ্যান ও ৪৫টি লাইট জ্বলল!

উজ্জ্বল ধর :
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:০৬:২৪,অপরাহ্ন ২১ জুলাই ২০২২সিলেটের ওসমানীনগরে বিরাজমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় মতবিনিময় সভা আহ্বান করে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সিলেট-১ কাশিকাপন জোনাল অফিসের ডিজিএম মুজিবুর রহমান চৌধুরী।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিকেল ৩টায় উপজেলা মিলনায়তনে সভা আহ্বান করে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডিজিএম নিজেই অনুপস্থিত ছিলেন। তার এমন দায়িত্বহীনতার কারণে ক্ষোভ ব্যক্ত করে অনেকেই সভাস্থল ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ওসমানীনগরে বিদ্যুৎ ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন লোডশেডিংয়ের শিডিউল দিলেও এর বাইরে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকছে এলাকাবাসী। এতে চরম ক্ষুব্দ হয়ে উঠেছেন উপজেলা সর্বস্তরের মানুষ। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এমনকি গ্রাহকরা সম্প্রতি ২ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করেও রাখে।
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করতে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় উপজেলা মিলনায়তনে সভা আহবান করেন ডিজিএম। সভায় এলাকার সাংবাদিকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। নির্ধারিত সময়ে সাংবাদিকসহ অনেকেই সভাকক্ষে উপস্থিত হলেও বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডিজিএম মুজিবুর রহমান চৌধুরী অনুপস্থিত থাকায় উপস্থিত অনেকেই সভাস্থল ত্যাগ করেন।
এদিকে চলমান সংকট নিরসনে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার প্রশাসনিক নিদের্শ উপেক্ষা করে বিনা প্রয়োজনে সভাস্থলে ৬০ আসনের বিপরীতে ৪৫ লাইট জ্বলতে এবং ২৩টি ফ্যান ঘুরতে দেখা যায়। অথচ, এ সময় সভাকক্ষে সব মিলিয়ে ১৭জন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত আবদুল মনাফ বলেন, আমাদের ডেকে ডিজিএম নিজেই অনুপস্থিত। এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগ যেখানে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হওয়ার কথা বলছে সেখানে প্রয়োজন ছাড়াই অসংখ্য ফ্যান ঘুরছে এবং লাইট জ্বলছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সিলেট-১ কাশিকাপন জোনাল অফিসের সাবেক পরিচালক আবদুল মতিন বলেন, আমন্ত্রণ পেয়ে পল্লী বিদ্যুতের সভায় এসেছিলাম কিন্তু প্রায় দেড় ঘন্টা অপেক্ষা ডিজিএম উপস্থিত না হওয়ায় সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে সভাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি।
উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আব্দুল মতিন বলেন, বিকেল ৩টায় সভায় আসার জন্য সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডিজিএম উপস্থিত না হওয়ায় সভা অনুষ্ঠিত হয়নি।
এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সিলেট-১ কাশিকাপন জোনাল অফিসের ডিজিএম মুজিবুর রহমানের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানা বলেন, ডিজিএম বলেছিলেন সাড়ে ৩টায় সভা অনুষ্ঠিত হবে। আমার একাধিক সভা থাকায় আমি উপস্থিত হতে পারিনি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘন্টা পরও তিনি কেন উপস্থিত হননি বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।
এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌশলী দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, ডিজিএম সাহেব আরেকটি সভায় ব্যস্ত রয়েছেন বলে জেনেছি। উক্ত সভা শেষ করেই তিনি মতবিনিময় সভায় যাবেন।
এদিকে বিকাল ৩ টার সভা সন্ধ্যা ৬টার দিকে শুরু হলে এতো লাইট ও ফ্যান চালানোর বিষয়ে উপস্থিত অনেকেই ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। সবার ক্ষোভের মধ্যে অতিরিক্ত লাইট ও ফ্যান বন্ধ করতে বাধ্য হয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।