পৌরসভা ঘোষণা, বঞ্চিতই রইলো ওসমানীনগর

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২০:৫৭,অপরাহ্ন ২১ অক্টোবর ২০১৯সব ধরণের সুযোগ সুবিধা থাকা সত্বেও অধরাই থেকে গেল ওসমানীনগর বাসীর একটি স্বপ্ন। প্রতিশ্রুতির বেড়াজালে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আটকে আছে ওসমানীনগর পৌরসভা ঘোষণা। আজ ওসমানীনগরের পাশ্ববর্তী বিশ্বনাথকে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর বঞ্চিতই রইলো ওসমানীনগর।
আর এর ফলে স্থানীয়দের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে ওসমানীনগরকে পোউরসভায় উন্নীত করার কাজ শুরু হয়। ের অংশ হিসেবে সীমানা নির্ধারণ, প্রশাসনিক কার্যক্রমের আনুষঙ্গিক রোডম্যাপ তৈরী প্রাথমিক নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন বিষয়াদি গুছিয়ে আনা হয়। কিন্তু সব প্রক্রিয়া চুড়ান্ত হলেও দীর্ঘ ২০ বছরেও পৌরসভার সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারেনি এ অঞ্চলের মানুষ।
১৯৯৯ সালের ২২ জুলাই তৎকালিন স্পিকার হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী তাজপুরের মঙ্গলচন্ডী নিশিকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে ওসমানীনগর এলাকায় পৌরসভার ঘোষণা দেন।
এরপর ১৯৯৮ সালে তৎকালিন সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গোয়ালাবাজারের এক জনসভায় অতিসত্ত্বর ‘গোয়ালাবাজার পৌরসভা’ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন।
পরবর্তীতে ২০০০ সালের জুনে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব স্বাক্ষরিত প্রেরিত পত্রের মাধ্যমেও পৌরসভা বাস্তবায়নের ব্যাপারে এলাকাবাসীকে আশ্বস্থ করা হয়। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আজও আলোর মুখ দেখেনি। এতে এলাকার মানুষের মনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র গোলাবাজারকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণের জন্য ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কয়েক শতাধিক জনগণের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ওসমানীনগরে প্রাচীনতম ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র গোয়ালাবাজার থেকে প্রতিবছর প্রায় দেড় কোটি টাকার রাজস্ব প্রদান করা হয়। সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলাধীন বিভিন্ন উপজেলার হাজার হাজার মানুষের সমাগমে এই বাজারে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ব্যবসায়িক লেনদেন হয়ে থাকে। যার কারণে ব্যবসা প্রসিদ্ধ এই বাজারে বিভিন্ন ব্যাংকের ১৭ টি শাখাসহ বীমা অফিসের শাখা, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, উপজেলা প্রেসক্লাব ভবন, সরকারি ডাকঘর, পরিবার পরিকল্পনা অফিস, চক্ষু হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডাক্তারের চেম্বার, ঔষধের দোকান, মহিলা ডিগ্রী কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফাজিল (প্রস্তাবিত কামিল) মাদ্রাসা, কিন্ডারগার্টেন স্কুল, গণপাঠাগার, কৃষি অফিসসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ও থানা ভবন গোয়ালাবাজার ইউনিয়নে অবস্থিত। কিন্তু এলাকার সচেতন মহলসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষ বিগত প্রায় দুই যুগ ধরে গোয়ালাবাজারকে পৌরসভা ঘোষণা দিয়ে তা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসলেও কার্যত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। জরুরী ভিত্তিতে ‘গোয়ালাবাজার পৌরসভা’ বাস্তবায়ন করার জোর দাবি জানান এলাকাবাসী।
গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক সুরমা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটনেটকে বলেন, পৌরসভার স্থানটি গোয়ালাবাজার হওয়ার যৌক্তিকতা দেখিয়ে তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য বাজারের চেয়ে গোয়ালাবাজারের রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য । এছাড়া সিলেটের একটি অন্যতম ইউনিয়ন গোয়ালাবাজার। শিক্ষা, চিকিৎসাসহ ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় গোয়ালা বাজার ইউনিয়নের অবস্থান ঈর্ষণীয় পর্যায়ে। তাই নাগরিক জীবনে উন্নয়নের ছোঁয়ায় জরুরী ভিত্তিতে গোয়ালাবাজারকে পৌরসভা ঘোষণা করার জোর দাবি
ওসমানীনগর উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ইকবাল আহমেদ সুরমা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটনেটকে বলেন,এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবী পৌরসভা। ওসমানীনগর সব ধরণের সুযোগ থাকা সত্বেও ওসমানীনগর বঞ্চিত রইলো। আমাদের জোর দাবী অচীরেই যেন দাবীটি বাস্তবায়ন হয়।