মাধবপুরে শিশু লিজা হত্যা: ১ বছর পর প্রধান আসামী গ্রেফতার

মাধবপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:২৮:১২,অপরাহ্ন ২৫ জুলাই ২০২২হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আইলাবই গ্রামের শিশু কন্যা তাকমিনা আক্তার লিজা (৯) হত্যার ১ পর প্রধান আসামী তাকবীর খুলনা থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।
হবিগঞ্জ জেলার পিবিআই সুত্রে জানা যায়, শিশু তাকমিনা আক্তার (৯) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের ৫ মাস পর প্রধান আসামী তাকবীর হাসানকে (২০) খুলনা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)।
গত শনিবার (২৩ জুলাই) বিকাল ৩টার দিকে খুলনা জেলার খালিসপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকবীর হাসান আইলাবই এলাকার সাইদুর রহমান ওরফে মন মিয়ার পুত্র। তাকবীর হাসান ঘটনার পর থেকে খুলনায় পালিয়ে গিয়ে একটি চায়ের দোকানে কাজ নেয়। পিবিআই তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। রোববার সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত আসামি তাকবীর হাসান হত্যার দায় স্বীকার করে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
আসামীর বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল আহাদ জনান, আসামী তাকবীরের সাথে তারই গ্রামের একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক চলাকালীন সময় একদিন সন্ধ্যায় তারা দেখা করতে গেলে ভিকটিম লিজা তাদেরকে একত্রে দেখে ফেলে। ভিকটিম লিজা আক্তার ঘটনাটি মেয়েটির মাকে জানিয়ে দেয়। এরপর থেকে মেয়েটির সাথে তাকবিরের প্রেমের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। এই ঘটনায় আক্রোশান্বিত হয়ে আসামী তাকবীর হাসান গেল বছর ২১ জুলাই ঈদ-উল-আযহার দিন সকাল ৭টায় শিশু লিজাকে গলাটিপে হত্যা করে।
প্রসঙ্গত, শিশু লিজাকে গত বছরের ২১ জুলাই ঈদ-উল-আযহার দিন সকাল অনুমান সাড়ে ৬টায় সেলিনা বেগম তার মেয়ে তাকমিনা আক্তার লিজাকে মাধবপুর উপজেলার পাশের গন্ধব্যপুর গ্রামের একটি দোকান থেকে নুডুলস ও প্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্য সামগ্রী কিনে আনার জন্য পাঠান। পরবর্তীতে তার মেয়ে নুডুলস নিয়ে বাড়ীতে ফিরে না আসলে আশেপাশের সম্ভাব্য সকল স্থানে ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে খোঁজাখুজি করে মেয়ের কোন সন্ধান না পেয়ে সেলিনা বেগম মাধবপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রী করেন।
হত্যার চারদিন পর ২৫ জুলাই ১১টায় দুই জন মহিলা গ্রামের বাঁশ ঝাড়ের ভিতরে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে ভিকটিম লিজার অর্ধ-গলিত মৃতদেহ দেখতে পান এবংভিকটিমের মা সেলিনা বেগমকে সংবাদ দেন। তাৎক্ষনিক ভাবে সেলিনা বেগম ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে তার মেয়ের অর্ধ-গলিত মৃতদেহ শনাক্ত করেন। লাশ উদ্ধারের পর লিজার পিতা বাদী হয়ে মাধবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এর আগে এ ঘটনায় জড়িত আরও তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলো- বাহার উদ্দিন, খাদিজা আক্তার তাজরীন ও আমেনা খাতুন আঞ্জু।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলার পিবিআই মামলা তদন্তকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শাহনেওয়াজ সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ৯ বছরের শিশু তাকমিনা হত্যার রহস্য উদঘাটন এর ৫ মাস পর প্রধান আসামী তাকবীরকে খুলনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামি তাকবীর হাসান হত্যার দায় স্বীকার করে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।