লন্ডনে প্রচণ্ড ঠান্ডায় ও দমবন্ধ হয়ে মারা যান ৩৯ অভিবাসী

লন্ডন অফিস
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:০৭:০৯,অপরাহ্ন ২৫ অক্টোবর ২০১৯বুধবার লন্ডনের এসেক্সে ৩৯টি মৃতদেহসহ একটি ট্রাক উদ্ধার করে দেশটির স্থানীয় পুলিশ। উল্লাস মুখর শহরটি কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় আতঙ্কে। বন্ধ কন্টেনারে কাদের লাশ? তার এল কোথা থেকে? কেনই এই ধরনের নারকীয় পরিস্থিতিতে প্রাণ দিতে হল হতভাগ্যদের? উঠছে এমন প্রশ্নই।
স্থনীয় সময় বৃহস্পতিবার লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিশ জানায়, ৩৯ জন মৃতের প্রায় সবাই চীনা নাগরিক। এরই মধ্যে দেশের চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ব্রিটেনে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে ঘটনাস্থলে গিয়ে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে বেলজিয়াম পুলিশের কাছেও এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছে সে দেশের চীনা দূতাবাস।
এদিকে তদন্তে জানা গেছে, মৃতদেহ ভর্তি কন্টেনারটি চীন থেকে প্রায় পাঁচ হাজার মাইল সফর শেষ করে বেলজিয়াম হয়ে জলপথে পূর্ব লন্ডনে ঢুকেছিল। কন্টেনারটি দুবার ইংলিশ চ্যানেল পার করেছিল। দীর্ঘযাত্রা পথই স্পষ্ট বলে দেয় যে বেশ কয়েকদিন ধরেই কন্টেনারটির ভিতরে বন্ধ ছিল চীনা নাগরিকরা। প্রচণ্ড ঠান্ডায় ও অক্সিজেনের অভাবে দমবন্ধ হয়েই তাদের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারের সময় মৃতদেহগুলো জমে গিয়েছিল।
তদন্তকারীর মনে করছেন, চীন থেকে মানব পাচারকারীদের সহজে অবৈধভাবে লন্ডনে প্রবেশ করার চেষ্টা করছিলেন চীনা নাগরিকরা। তবে আসন্ন ব্রেক্সিটের দরুণ সীমান্তে কড়া নজরদারির জেরে সময়মতো লন্ডনে পৌঁছাতে পারেনি ট্রাকটি। ফলে প্রাণ দিতে হয় ভিতরে বন্ধ ৩৯ জনকে। বুধবারই ট্রাকটির ড্রাইভার ২৫ বছরের রবিনসনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনে আরো একটি লরির ভেতর থেকে পাওয়া যায় নয় জনকে। তবে এক্ষেত্রে সবাইকেই জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, কেন্টে এম২০ সড়কে লরিটিকে আটকানো হয়। লরির কন্টেনারের মধ্যে থেকে নয় জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। তারা ‘অভিবাসী’ বলে জানা গিয়েছে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে লরিটিকে আটক করলে কন্টেনার থেকে নয় অভিবাসীর খোঁজ মেলে। উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিবাসন দপ্তরে তাদের পাঠানো হয়েছে। পরপর দু’দিনে একই ধরনের ঘটনায় বিহ্বল গোটা দেশ। তবে লন্ডনে চীনা অনুপ্রবেশ এই প্রথম নয়।