সমন্বয়ের অভাবে সিলেট ও সুমানগঞ্জে ত্রাণ পাচ্ছেন না অনেকেই

সুরমা নিউজ ২৪ ডট নেট
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২৯:৫৭,অপরাহ্ন ২২ জুন ২০২২সুনামগঞ্জ ও সিলেট স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে। এর মধ্যে ভারী বৃষ্টি বাড়িয়েছে ভোগান্তি। তবে এখন বৃষ্টি কমে আসায় পানি কিছুটা কমেছে। কিন্তু এখনও পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ। বিশুদ্ধ, পানি আর খাদ্যের অভাব চারদিকে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামাজিক নানা সংগঠন ত্রাণ নিয়ে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু তা বন্যাকবলিত সুনামগঞ্জের দুর্গম এলাকায় পৌঁছাচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেকের। মূলত সমন্বয়হীনতার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে জানান তারা। সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন পরিস্থিতি।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল দক্ষিণ বড়দলের পুরান খালাস গ্রামের বাসিন্দা কলেজ ছাত্র তোফায়েল আহমেদ তারেক সমকালকে বলেন, আমরা চার থেকে পাঁচদিন ধরে পানিবন্দি। ঘরে বিদ্যুৎ নেই, চুলাও জ্বলছে না। পরিবারের লোকজন আরেক বাসায় ওঠেছে। এখন পর্যন্ত তেমন ত্রাণ সহযোগিতা পাইনি। এদিকটা দুর্গম হওয়া অনেকেই ত্রাণ পাচ্ছেন না।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল দক্ষিণ বড়দলের পুরান খালাস গ্রামের বাসিন্দা কলেজ ছাত্র তোফায়েল আহমেদ তারেক বলেন, আমরা চার থেকে পাঁচদিন ধরে পানিবন্দি। ঘরে বিদ্যুৎ নেই, চুলাও জ্বলছে না। পরিবারের লোকজন আরেক বাসায় ওঠেছে। এখন পর্যন্ত তেমন ত্রাণ সহযোগিতা পাইনি। এদিকটা দুর্গম হওয়া অনেকেই ত্রাণ পাচ্ছেন না।
‘পুরো দেশের মানুষ সিলেট-সুনামগঞ্জের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমার মনে হয়, ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে সমন্বয় করা গেলে সংকট মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াবে এ অঞ্চলের মানুষ’, যোগ করে তোফায়েল। জানা যায়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, উত্তর শ্রীপুর, মধ্যনগর, দোয়ারাবাজার, দিরাই উপজেলা, শাল্লা উপজেলায় বেশকিছু ইউনিয়ন পর্যায়ে এখনও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি।
ত্রাণ দিতে আসা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সিলেটের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলো চেনেন না। আবার অনেক সময় এসব জায়গায় যাওয়ার জন্য নৌকাও পাওয়া যাচ্ছে না।
ত্রাণ দিতে আসা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাকিল উজ জামান বলেন, সুনামগঞ্জে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। আমরা ত্রাণ দিতে তাহিরপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাব কিন্তু নৌকা পাওয়াই দুষ্কর। যারা যেতে চাইছেন, তারা ভাড়া বেশি চান। প্রশাসন এদিকে নজর দিলে আমরা যারা ত্রাণ দিতে এসেছি তাদের সুবিধা হতো। ভাড়ায় যে টাকা যাচ্ছে, তা দিয়ে আরও অনেক মানুষের পাশে দাঁড়ানো যেত।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, সব জায়গায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠনও পরিবহন ভাড়া বেশি হওয়ায় দুর্গম এলাকায় ত্রাণ দিচ্ছে না। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
এসব বিষয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বন্যা দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারি বরাদ্দগুলো বন্যা কবলিত সব উপজেলায় পৌঁছে দিচ্ছি। গতকাল প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫৫ লাখ টাকা দিয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। আর যারা ব্যক্তি বা কোনো সংগঠনের ব্যানারে এসেছেন সেগুলো সমন্বয় করা যাচ্ছে না। তবে যারা আমাদের অবগত করছেন তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। যেসব ব্যবসায়ী এই দুর্যোগের সময় দ্রব্যমূল্য বাড়াচ্ছেন তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত দুইদিনে বৃষ্টি কম হওয়ায় সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। শহরাঞ্চলে পানি নেই বললেই চলে। তবে খুবই ধীরে ধীরে পানি নামতে থাকায় মানুষের দুর্ভোগ দীর্ঘায়িত হচ্ছে।