সিজারের সময় প্রসূতির গর্ভে ফুল রেখেই সেলাই!

সুরমা নিউজ ২৪ ডট নেট
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:০১:৪৬,অপরাহ্ন ০২ আগস্ট ২০২২পিরোজপুরে সিজারের সময় এক প্রসূতির গর্ভে ফুলের অংশ ও অপরিষ্কার রেখেই পেট সেলাই করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) দুপুরে পিরোজপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. ইকবাল মাসুম এ মামলার বিষয়ে পিরোজপুর সিআইডিকে তদন্ত করে দেখতে আদেশ দেন বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী এ এস ওমান।
ভুক্তভোগী প্রসূতির নাম মনিরা বেগম (২২)। তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলার আলামকাঠী এলাকার জসিম খানের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি গুরুতর অবস্থায় খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন- আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমের চিকিৎসক শিকদার মাহমুদ ও ম্যানেজার সঞ্জয় মিস্ত্রী।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. এ এস ওমান জানান, পিরোজপুর শহরের আলামকাঠী এলাকার জসিম খান তার প্রসূতি স্ত্রী মনিরা বেগমকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ডা. শিকদার মাহমুদের কাছে যান। চিকিৎসক তাদের আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নাসিং হোমে ভর্তির জন্য পরামর্শ দেন।পরে গত ০৮ জুলাই আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নাসিং হোমে ডা. শিকদার মাহমুদের তত্ত্বাবধায়নে প্রসূতি মনিরা বেগমকে ভর্তি করা হয়। তবে ক্লিনিকের ম্যানেজারের চাপে দুপুরেই মনিরা বেগমের সিজারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দুপুরে ডা. শিকদার মাহমুদ তড়িঘড়ি করে ক্লিনিকে এসে সিজার করেন। সিজারের সময়ে প্রসূতি মনিরা বেগমের পেট প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কেটে ফেলেন এবং নবজাতকের নাভির অংশ কেটে তা না বেঁধে রাখেন। এ ছাড়া প্রসূতি নারীর গর্ভে ফুলের অংশ ও অপরিষ্কার রেখেই পেট সেলাই করে দিয়ে তিনি চলে যান।
পরে প্রসূতি মনিরা বেগমকে বাড়ি নিয়ে গেলে কয়েকদিন পরেই মনিরার প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তখন আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নাসিং হোমে গিয়ে ডা. শিকদার মাহমুদকে বিষয়টি জানালে তিনি রোগীকে কোনো চিকিৎসা না দিয়েই পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তির পরামর্শ দেন।
রোগীকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার অবস্থা আরও গুরুতর হয়। তখন পিরোজপুর হাসপাতাল থেকে খুলনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই প্রসূতিকে। তখন রোগীকে মোট ১৪ ব্যাগ রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হয়।
খুলনার চিকিৎসকরা রোগীর অবস্থা গুরুতর দেখে কয়েকটি টেস্ট দিলে তারা দেখতে পান যে গর্ভে ফুলের অংশ ও অপরিষ্কার রেখেই পেট সেলাই করা হয়েছে। তাই আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নাসিং হোমের চিকিৎসক ডা. শিকদার মাহমুদ ও ক্লিনিকের ম্যানেজারের বিচার দাবিতে ভুক্তভোগী মনিরা বেগমের স্বামী জসিম খান আদালতে একটি মামলটি করেছেন।