সিলেটে ইয়াবা ম্যাজিক : ফিটিং মামলায় অসহায় নয়ন গ্রেফতার

সুরমা নিউজ
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫৮:০৭,অপরাহ্ন ০৬ নভেম্বর ২০১৯একখন্ড জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে ছিলেন শরিকানদের সাথে নগরীর সৈয়দানীবাগের ২ সন্তানের জনক সৈয়দ নয়ন (৩৮)। এলাকায় এক লন্ডনীর বাসার কেয়ারটেকারীর অর্থে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে টানাপোড়নের সংসার তার। ১৫ দিন পূর্বে বিরোধপূর্ণ জমির গাছগাছালি কর্তন নিয়ে তর্কাতর্কি হয় চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সৈয়দ সাব্বির ও সৈয়দ আফজালের সাথে। এরপর হুমকির মুখে পড়ে যান নয়ন। সেই হুমকির শেষ পরিণতিতে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানিয়ে পুলিশের হাতে আটক করা হয় গত ২৭ অক্টোবর রোববার, এমন দাবী তার স্ত্রী সাবিনা বেগমের। পুলিশের বক্তব্য ও নয়ন আটকের পর মামলার এজহারে ঘটনাস্থল পরিবর্তন করায় দেখা দিয়েছে চাঞ্চল্য।
এতে করে এ অভিযানের পেছনের নানা খবর বেরিয়ে পড়ে লোকমুখে। জনগনের বন্ধু পুলিশ কোন স্বার্থে হয়রানীর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হলো সেই প্রশ্নও রীতিমতো। নয়নের ঘরে পুলিশের উপস্থিতিও আটককালে নয়নের অসহায় মুখের দৃশ্যে এখনও স্থানীয়দের অন্তরকে পীড়িত করছে। সেই সাথে পুলিশের উপর আস্থা, বিশ্বাস ও ইমেজ কেন প্রশ্নবিদ্ধ করলেন উপশহর পুলিশ ফাড়িঁর এসআই মো: মনোজ মিয়া তা নিয়েও বিরাজ করছে নানান জল্পনা কল্পনা।
আটকের সময় পুলিশ ও কৌতুহলী মানুষের উপস্থিতির ভিডিও রেকর্ড রয়েছে নয়নের ছোট ভাই আহসানের নিকট। এসব বাস্তবতাকে আড়াল করে এজহারে এসআই মনোজের ঘটনাস্থল পরিবর্তনের নৈপথ্যেতা নি:সন্দেহে তদন্তের দাবী রাখে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। সঠিক তদন্ত হলে, এ অভিযানের আসল চিত্র বেরিয়ে আসার পাশাপাশি কোন ইস্যুতে নিরপরাধ নয়নকে ইয়াবা ম্যাজিকে ফাঁসানো হয়েছে সেই সিন্ডিকেটের অপৎপরতাও জনসম্মুখে উঠে আসবে।
একাধিক সূত্র ও নয়নের স্ত্রী সাবিনা বেগম বলেন, তার স্বামীর চাচাতো ভাইয়ের ছেলে ভাতিজা সৈয়দ সাব্বির ও স্থানীয় ব্যবসায়ী আফজলে সাথে জমি নিয়ে বিরোধ প্রকাশ্যে দেখা দেয় ১৫ দিন পূর্বে।
সৈয়দ সাব্বির স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা। আওয়ামী লীগ নেতা আসাদ উদ্দিনের আত্নীয় বলে সকলের কাছে পরিচয় দেন তিনি। ফেইসবুকের প্রোফাইলে নিজের ছবিও আপলোড করেছেন রাজনীতিক শক্তির খুঁটির জোর জানান দিতে।
সৈয়দ আফজাল হলেন সাব্বিরের ঘনিষ্টজন। আফজল কলোনী ব্যবসায়ী। টাকা পয়সায় পকেট ভরা। এই দুই প্রভাবশালীর সাথে জমি নিয়ে বিরোধে রোষানলে পড়েন নয়ন। ২৭ অক্টোবর রোববার সকালে ঘুমন্ত অবস্থান দরজায় নাড়া দেন উপশহর পুলিশ ফাড়িঁর একদল পুলিশ। দরজা খুললেই দ্রুত বালিশের কাভারের ভেতর হাত ডুকিয়ে ইয়াবা বের করে দেখায় পুলিশ। ঘটনার আকস্মিকতায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন নয়ন।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, দুই লাখ টাকার দফারফায় নয়নকে আটক করায় রাজি হন শাহপরান থাকার উপশহর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত এসআই মনোজ মিয়া। তবে আটকের পর এক লাখ নব্বই হাজার হাজার টাকা যায় তার পকেটে। পূর্ব পরিকল্পনায় নয়ন ও তার পরিবারের অজ্ঞাতে ইয়াবা লুকিয়ে রাখে পুলিশকে ব্যবহারকারী প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। ইয়াবা রাখার স্থান নিশ্চিত করার পরই অভিযানে নেমে পড়েন এসআই মনোজ মিয়া।
এদিকে নয়নকে কারাগারে প্রেরনের রাত থেকেই সৈয়দ সাব্বির ও সৈয়দ আফজাল বিরোধকৃত জমি দখল করে রাতের আধারে মাটি ভরাট করছেন।
সুত্র-নিউজ মিরর ২৪